আপনারা যা ভাবছেন, তা কিন্তু না । আজ আমি কোন বৈজ্ঞানিক কল্প-কাহিনী বলছি না । আমার ক্ষুদ্র জীবনের কিছু অভিজ্ঞতা মাত্র।
*********
গেল কুরবানির ঈদে সন্ধ্যায় বের হলাম ঢাকা শহর ঘুরতে । রিক্সা নিলাম কাঁটাবন থেকে, ১ ঘণ্টার জন্য । আমি, আমার বোন আর আমার ছোট ভাগ্নে আমাদের “এ জার্নি বাই রিক্সা টু ফাকা ঢাকা” শুরু করলাম। রিক্সাটা যখন ফুলার রোড দিয়ে যাচ্ছিল তখন আমার বোন বললো “দ্যাখ”। আমি দেখলাম একটি মাঝ বয়সী লোক রাস্তার পাশে ডাস্টবিন থেকে খাবার খুঁজে খাচ্ছে । দেখে মনে মনে খুব ব্যথিত হয়েছিলাম । এরপর এটা নিয়ে না ভেবে বাসায় চলে আসি। আর বাসায় এসে দেখি এক বিপত্তি। এটি গল্পের অংশ নয় তাই বিপত্তি নিয়ে এই সংখ্যায় কিছু বলছি না। আজ শুধু এ মনে প্রশ্ন জাগছে, সেই লোকটি কি কেবল তার পেটের ক্ষুধাই নিবারণ করছিল? নাকি তথা কথিত ভদ্র সমাজের রাক্ষুসে ক্ষুধার কাছে পরাজিত হয়ে নিজের ভবিষ্যৎ খুঁজে নিয়ে ছিল ওই ডাস্টবিনে ।
সাইফুল সূর্যের “উচ্ছেদ” গল্পের কয়েকটি লাইন মনে পরে যাচ্ছে। যদিও হুবহু মনে নেই। সেখানে তিনি লেখকদের কাদা ছোড়াছুড়ির কথা বলেছিলেন। সেই কাদা ছোড়াছুড়ি ছিল শুধুমাত্র ভোটে বিজয়ী হওয়া নিয়ে। সত্যি শুধু ভোটে জেতার জন্য লেখকেরাও কতটা নিচু হতে পারে তা আগে জানা ছিল না। গল্পকবিতার লেখকদের ক্ষুধা একটাই, আর তা হল ভোট। ভোট এমনই এক জিনিষ যা কিনা সৃজনশীলতাকেও হারাতে সক্ষম।
ভোটের কথা বলতেই মনে পরে গেল এদেশের নেতা-নেত্রীদের কথা । ক্ষমতার লালসায় তারা কতকিই না করে । এদল-ওদল, দলবদল, কাদা ছোড়াছুড়ি, ট্রাম্প কার্ড চালাচালি আরো কত কি । যেখানে সৃজনশীলতায় ভরপুর লেখক-কবিরাই ভোটের জন্য কাদা ছোড়াছুড়িতে ব্যস্ত, ভোট বাণিজ্যে ব্যস্ত সেখানে রাজনীতিবিদেরা আর এমন কি, এদেরই বা আমরা এত খারাপ বলব কেন?
এদেশের নেতাদের ক্ষুধা কেবল ক্ষমতায় যাওয়া নিয়ে । কে কত বেশি সময় ক্ষমতায় থাকতে পারে । কত বেশি অবৈধ টাকা কামাতে পারে, এসব নিয়েই ব্যস্ত ওরা । তাদের এত সময় কই যে দেশ নিয়ে ভাববে? এভাবে দেশটা কোথায় যে যাচ্ছে তা কেও জানে না । তবে হ্যাঁ একথা ঠিক অন্য দেশ যেখানেই যাক, যত দূরেই এগিয়ে যাকনা কেন, এদেশ কোথাও যাবে না । এদেশের সবাই অতীত নিয়েই ব্যস্ত, আর তাই এদেশ অতীতেই পরে থাকবে । আর এভাবে এদেশ হবে আদিবাসীদের স্থায়ী ঠিকানা ।
এ পৃথিবীটা যদি ফুলার রোড হয়…….তাহলে ডাস্টবিনটা নি:সন্দেহে বাংলাদেশ । আর ওই লোকটি এদেশের বঞ্চিত-লাঞ্ছিত জনগণের প্রতীক ।
***********
আচ্ছা এবার স্বমহিমায় ফিরে আসি, জানেনই তো ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভাঙে । আর আমিও সায়েন্স ফিকশন ছাড়া থাকতে পারিনা । তাই ছোট্ট একটি সায়েন্স ফিকশন দিয়েই শেষ করব । তবে এটিকে কৌতুক বলাই শ্রেয় । চলুন সময়টা একটু এগিয়ে নিই…..
মহাবিশ্বে বসবাস উপযোগী একমাত্র গ্রহ মঙ্গল । একসময় পৃথিবী নামক গ্রহে মানুষ বসবাস করত । তবে এখন যে করে না তা কিন্তু নয়, এখনও পৃথিবীতে কিছু মানুষ…………না-নাহ বেশ কিছু মানুষ বাস করে । যারা এখানে বাস করে তাদের অধিকাংশই মঙ্গল থেকে নির্বাসিত বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রাপ্ত অপরাধী । তবে এখানে কিছু আদিবাসীও রয়েছে যাদের মঙ্গলে যাবার সৌভাগ্য হয়নি । মঙ্গল অত্যাধুনিক এক গ্রহ । এ গ্রহের মত সুন্দর, সাজানো গ্রহ দ্বিতীয়টি নেই । এ গ্রহের মানুষ মল ত্যাগ করে না । কেননা তারা খাদ্য গ্রহণ করে না । মানুষ খাদ্য গ্রহণ করে শক্তি অর্জনের জন্য । সেই শক্তি ব্যয় করে মানুষ কাজ করে । তবে মঙ্গলের বাসিন্দারা শক্তি অর্জনের জন্য অন্য পদ্ধতি অবলম্বন করে । তারা সূর্য থেকে আগত আলো দিয়ে একটি ক্যাপসুলের ভিতর নিজেদের চার্জ করে নেয়, ব্যাপারটি অনেকটা ব্যাটারি চার্জ করার মত । যখন তাদের শক্তি ফুরিয়ে আসে তখন তারা ক্যাপসুলে ঢুকে পরে । মাত্র ২ মিনিটে তারা পুরপুরি চার্জড হয় । কিন্তু তারাও তো মানুষ, তাহলে তাদের কি ক্ষুধা লাগে না? লাগে, তবে ক্ষুধা নিবারণের জন্য তারা কিছুটা সনাতন পদ্ধতি অবলম্বন করে । অর্থাৎ ক্যাপসুল থেকে বের হয়ে তারা ক্ষুধা নিবারণ বরি গ্রহণ করে । এ বরিতে তাদের ক্ষুধা দূর হয়, কিন্তু কোন মল উৎপাদন হয় না । এ গ্রহে কোন দূষণ নেই । সব কিছুই সুন্দর নিয়মে চলে এখানে । কিন্তু তারা অবাক হয় যখন দেখে পৃথিবীর আদিবাসীরা ক্ষুধা নিবারণের জন্য নানা রকম খাদ্য গ্রহণ করছে । এরা খাদ্য গ্রহণের পাশাপাশি পৃথিবী নোংরা করার জন্য মল ত্যাগও করছে । তারা একে অপরে মারামারি করছে, তুচ্ছ ঘটনায় যুদ্ধে জড়িয়ে পরছে । এসব কিছু মিলিয়ে পৃথিবীটা আসলেই বসবাসের অনুপযোগী । এখন প্রশ্ন হল এ আদিবাসীরা কারা । আর এর উত্তর এরা পৃথিবীর বাংলাদেশের মানুষ ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।